২০২৩ সালে রেকর্ডসংখ্যক মানবিক বিপর্যয় দেখেছে বিশ্ব
 প্রকাশিত: 
                                                ২০ জানুয়ারী ২০২৪ ১৪:৪২
 আপডেট:
 ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ২২:৪৮
                                                
 
                                        প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে যত মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে— তত সংখ্যক বিপর্যয় বা দুর্যোগ গত এক দশকের মধ্যে ঘটেনি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সদ্য বিদায় নেওয়া বছরটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অন্তত ২৯টি দেশ প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে ৪৩ বার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউএনএইচসিআর। সেই প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের বড় এবং উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের একটি তালিকাও করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা। তালিকায় স্থান পেয়েছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্প, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সুদানের সামরিক বাহিনী ও আধাসামরিক আএসএফের সংঘাত, মে মাসে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় মোচা, গাজায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধসহ বিভিন্ন ঘটনা।
ইউএনএইচসিআরের এক্সটার্নাল রিলেশনস বিভাগের পরিচালক ডমিনিক হাইড, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৈরী আবহাওয়ার পাশাপাশি সংঘাত ও মানবাধিকার লঙ্ঘন কোটি কোটি পরিবারকে বাস্তুচ্যুত করার পাশাপাশি ত্রাণ ও মানবিক সহায়তার জন্য হাত পাততে বাধ্য করেছে। বস্তুতত ২০২৩ সালে দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের কারণে বিশ্বের অজস্র মানুষকে যে ভয়াবহ ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে— তা এক কথায় অবর্ণনীয়।’
শুক্রবারের প্রতিবেদনে ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বের মোট বাস্তুচ্যুত ও শরণার্থী লোকজনের সঙ্গে যোগ হয়েছে মোট ১১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। এর আগে বিশ্বে এক বছরে এত সংখ্যক মানুষ আশ্রয়হীন হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
আশঙ্কার বিষয় হলো, চলতি বছর এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ইউএনএইচসিআরের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন আরও ১৩ কোটি মানুষ।
এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। একই বছর লিবিয়ার ৫ প্রদেশে প্রবল বর্ষণ এবং হড়কা বানে বাড়িঘর, সহায় সম্পদ হারিয়েছেন ৯ লাখ মনুষ। ঘুর্ণিঝড় মোচার জেরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের ১ কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটেছে সুদানে। সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সংঘাতে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৭০ লাখ মানুষ।
এছাড়া অক্টোবরে হেরাত প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে বাড়িঘর হারিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন ১ লাখেরও বেশি মানুষ। আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সংঘাতের কারণে বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন আজারবাইজানের নাগোরনো-কারাবাখ এলাকার ১ লাখেরও বেশি মানুষ। মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক(ডি আর) কঙ্গোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ।
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, বছরজুড়ে এসব দুর্যোগের ক্ষেত্রে সংস্থার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেওয়া এবং সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশে ইউএইএইসিআর পরিচালিত শরণার্থী শিবিরগুলোতে বর্তমানে ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ আশ্রিত অবস্থায় রয়েছেন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: