খেলাপি ঋণ ১০ বছরের জন্য পুনঃতফসিলের সুযোগ
প্রকাশিত:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৫৬
আপডেট:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:২৬

ব্যাংকগুলো বিশেষ বিবেচনায় খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করতে পারবে। মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্টের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতা দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ড পাবেন এবং সংশ্লিষ্ট খাতের সর্বনিম্ন সুদহারের চেয়ে এক শতাংশ কম সুদে সুবিধা নিতে পারবেন। এসব সিদ্ধান্ত ব্যাংকগুলোই কার্যকর করতে পারবে। তবে ৩০০ কোটি টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাছাই কমিটিতে নীতি সহায়তার জন্য আবেদন করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, বিগত সরকারের সময়ে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ সুবিধা দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা হলেও সরকার পতনের পর খেলাপি ঋণ দ্রুত বাড়তে থাকে। ইতোমধ্যে এ খাতের ঋণ ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ বিবেচনায় পুনঃতফসিলের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছিল। এখন সেই ক্ষমতা ব্যাংকগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হলো।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত শ্রেণিকৃত ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে ব্যাংকার–গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। এজন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করতে হবে। আবেদন পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হবে। ডাউন পেমেন্ট চেক বা অন্য কোনো মাধ্যমে দেওয়া হলে নগদায়নের পর থেকে ছয় মাস সময় গণনা করা হবে। তবে নগদায়নের আগে কোনো আবেদন কার্যকর হবে না। যেসব ঋণ ইতোমধ্যে তিনবার বা তার বেশি পুনঃতফসিল করা হয়েছে, সেখানে অতিরিক্ত এক শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিতে হবে।
নতুন নিয়মে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেওয়া লাগবে না। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন অবশ্যই নিতে হবে। একাধিক ব্যাংকের ঋণের ক্ষেত্রে প্রধান ঋণদাতা ব্যাংক অথবা সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংকের সম্মতিতে সভা আয়োজন করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোনো কারণে ৩০০ কোটি টাকার বেশি ঋণের বিষয়ে ব্যাংক থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া না গেলে তা নীতি সহায়তা সংক্রান্ত বাছাই কমিটিতে পাঠাতে হবে।
বিশেষ সুবিধা দেওয়া ঋণের বিপরীতে সাধারণ প্রভিশন রাখতে হবে। প্রকৃত আদায় ছাড়া ব্যাংকের আয় খাতে অর্থ স্থানান্তর করা যাবে না, তবে প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য স্থানান্তর করা যাবে। এসব ঋণের বিপরীতে নতুন সুবিধাও দেওয়া যাবে, তবে এর আগে গ্রাহকের আর্থিক অবস্থা ও পূর্ববর্তী লেনদেন যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।
তবে জালিয়াতি, প্রতারণা বা ঘোষিত ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের কোনো সুবিধা দেওয়া হবে না। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ এবং ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা বিবেচনা করে পুনঃতফসিল, পুনর্গঠন বা এক্সিট সুবিধার মেয়াদ নির্ধারণ করতে হবে। এ বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভায় স্পষ্ট কারণ উল্লেখ করতে হবে।
সুবিধা দেওয়ার পর কোনো শর্ত ভঙ্গ হলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের সব সুবিধা বাতিল হবে এবং ব্যাংক ঋণ আদায়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: