মির্জাপুরে অনিয়ন্ত্রিত রিকশা, যানজটে অতিষ্ট পৌরবাসী
 প্রকাশিত: 
                                                ৪ অক্টোবর ২০২১ ০০:৩৬
 আপডেট:
 ৬ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৪০
                                                
 
                                        টাঙ্গাইলের মির্জাপুর শহরে অনিয়ন্ত্রিত রিকশার যানজট আর অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে একদিনে যেমন রিকশার দীর্ঘ যানজটে পড়ে মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে, তেমনি অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। মির্জাপুর বাজার এলাকার প্রধান সড়কগুলোতে রিকশার দীর্ঘ সারির এই যানজট নিয়মিত দেখা যাচ্ছে।
২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত মির্জাপুর পৌরসভাধীন ৩ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন মির্জাপুর বাজার এলাকা বেশ কয়েকটি কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ। মির্জাপুর উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মির্জাপুর বাজার এলাকায় স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ব্যাংক-বীমা, কাঁচাবাজার, শপিংমল ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে।
এসব কারণে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মানুষজন বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন মির্জাপুর বাজারে যাতায়াত করে থাকে। আর বাজারের ভেতর চলাচলের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় বাহন হচ্ছে রিকশা। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে প্যাডেল চালিত রিকশার জায়গা দখল করে নিয়েছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক বা অটোরিকশা। কিন্তু এসব অনিয়ন্ত্রিত রিকশা প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি করছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মির্জাপুর বাজারের প্রধান সড়ক মেইন রোড, কালীবাড়ি রোড, বংশাই রোড ও মির্জাপুর বাইপাস এবং পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রতিদিনই রিকশার যানজট লেগে থাকে। শুধু দিনে নয় সন্ধ্যার পরেও একই চিত্র দেখা যায় মির্জাপুর মসজিদ মার্কেট এলাকায়। বিশেষ করে মির্জাপুর শহরের কাকলি মোড়, কাঁচাবাজার মোড়, সরলা মোড় এলাকায় দিনের বেশির ভাগ সময়ই রিকশার দীর্ঘ সারি চোখে পড়ে। এসবের পেছনে শুধু রিকশায় দায়ী নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মির্জাপুর শহরের ভেতর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্য সরবরাহের জন্য ছোট-বড় ট্রাক, ক্যাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ ভ্যান গাড়ি প্রবেশ করে থাকে। এসব ভারী যানবাহনগুলো সড়কের ওপর পার্কিং করে মাল উঠানামা করে জায়গা দখল করে থাকে। এতে করে সড়কের জায়গা সংকীর্ণ হয়ে গেলে ওই স্থানে দুই লেনে রিকশা চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় দীর্ঘ সারি তৈরি হয়।
এছাড়াও মির্জাপুর বাজার এলাকার বিভিন্ন সড়কের ফুটপাত দখল করে হকারদের ব্যবসা করা, রাস্তার পাশে সারি সারি মোটরসাইকেল পার্কিং করে রাখা এবং ছোট এই শহরে অতিরিক্ত রিকশার চাপ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি যানজট দেখা দিয়েছে।
মির্জাপুর মসজিদ মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মার্কেটের সামনে রাস্তার ওপর এক সারিতে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পার্ক করে রাখা হয়েছে। মার্কেটের সামনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকাররা বিভিন্ন পণ্য নিয়ে বেচাকানা করছে।
অন্যদিকে, কালীবাড়ি রোডে গিয়েও একই চিত্র দেখা যায়। এই রোডটি কাঁচাবাজার সংলগ্ন হওয়ায় রাস্তার ওপর রিকশা রেখে অনেকেই বাজার করে। এসব কারণেই মূলত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, রিকশার ভাড়া বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ পৌরসভা থেকে ভাড়া নির্ধারণ করে না দেয়ায় যার যা খুশি ইচ্ছামত ভাড়া চেয়ে বসে। এতে করে অনেক সময় বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে রিকশায় উঠতে হয়। তবে রিকশা চালকদের দাবি তারা পেটের দায়েই একটু বেশি ভাড়া চেয়ে থাকেন।
এর কারণ হিসেবে নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতিকেই দায়ী করছেন তারা। মির্জাপুর বাজারের বাসিন্দা তরফদার স্বপন কুমার জানান, মির্জাপুর পৌর এলাকায় পূর্বের মতো একটি ভাড়ার তালিকা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এতে করে কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে পারবে না।
মির্জাপুর পৌর মেয়র সালমা আক্তার বলেন, মির্জাপুর বাজার এলাকায় রিকশার যানজট নিরসন ও পৌরসভার ভেতর রিকশা ভাড়া নির্ধারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কেউ যদি নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকেন তাহলে তার রিকশার লাইন্সেস বাতিল করা হবে। এছাড়াও মির্জাপুর বাজারের যানজট নিরসনে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: