ত্রিপুরায় প্রবেশের অপেক্ষায় ইলিশবোঝাই ট্রাক
প্রকাশিত:
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৫৩
আপডেট:
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:১১

শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় যাওয়ার জন্য আখাউড়া স্থলবন্দরে অপেক্ষায় ট্রাক ভর্তি ২ হাজার কেজি পদ্মার ইলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে ট্রাক ভর্তি এ মাছ দেখা যায়।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশি ইলিশ মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মাতাব এন্ড সন্স এবং ভারতীয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পরিতোষ বিশ্বাস এ বাণিজ্য করছে। এছাড়া আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে ইলিশ ছাড়করণে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের দায়িত্বে রয়েছে শাকিয়াত কনস্ট্রাকশন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছের অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়। পরে বিশেষ বিবেচনায় দেশের ৩৭টি মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে হবে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। ভারতের বাজারে প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ মার্কিন ডলার ৫০ সেন্ট, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ৫২৫ টাকা।
জানা যায়, ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ হলেও আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ভারতে মোট ১২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।
৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে এ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার- এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে ৭৫০ টন, ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে ৩৬০ টন এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে ৪০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দিয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদনকৃত ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে হবে। প্রতিটি ইলিশের ওজন প্রায় এক কেজি ২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি।
জানা গেছে, গত বছর ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। রপ্তানি হয় এক হাজার ৩০৬ দশমিক ৮১৩ মেট্রিক টন ইলিশ। যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া রপ্তানি আদেশের ৪৪ ভাগ। অনেক প্রতিষ্ঠান মাছ না পেয়ে ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। এবারও মাছ সংকট ও অতিরিক্ত মূল্যের কারণে সব মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হবে না বলে ধারণা করছেন মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মাতাব এন্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী মাতাব শাহজাহান।
আখাউড়া স্থলবন্দরের কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান খান জানান, বন্দরে ইলিশ মাছ ভর্তি একটি ট্রাক ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ইলিশ মাছ রপ্তানিতে বন্দর মাশুল পাবে। কাগজ পত্রের কাজ শেষে যাতে দ্রুত ভারতে প্রবেশ করতে পারে সে জন্য সহযোগিতা করা হবে।
উল্লেখ্য যে, ইলিশ রপ্তানি একসময় উন্মুক্ত থাকলেও, ২০১২ সালে উৎপাদন সঙ্কটের কারণে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে ২০১৯ সাল থেকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিশেষ বিবেচনায় সীমিত পরিমাণে ইলিশ রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। গত বছর ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও এক হাজার ৩০৬ দশমিক ৮১৩ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল। এবার সরকার মোট ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে এবং আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: