নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে স্কুলভবন, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা
প্রকাশিত:
২৫ আগস্ট ২০২৫ ১২:৪২
আপডেট:
২৫ আগস্ট ২০২৫ ১৭:২০

ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের কাটাখালী নদীর ভয়াবহ ভাঙনে করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন বিলীনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়টির ভবন নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। ভবনটি ধসে পড়লে পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহতের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রহিম উল্যাহ চৌধুরীর দুই ছেলে তারেক মাহতাব রহিম ও জাবেদ সালাম রহিম ২০১৬ সালে ব্যক্তিগত অর্থায়নে পাঁচকক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করেন। ভবনটিতে সপ্তম শ্রেণির পাঠদান, নবম ও দশম শ্রেণির গ্রুপভিত্তিক বিষয়, বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি এবং ছাত্রীদের নামাজের স্থান রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ভবনের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। ভবনের উত্তর পাশে এবং লাগোয়া শহীদ মিনারে ফাটল দেখা দিয়েছে, যা ভবনটির স্থায়িত্ব নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদনান বিন আলম বলেন, ‘ভবনে দশম শ্রেণির গ্রুপ বিষয়গুলোর পাঠদান চলে। কখন পুরো ভবন নদীতে তলিয়ে যায় তা নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। বিদ্যালয়ের ভবনটি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিনাল দাস গুপ্তের অভিভাবক বলেন, ‘নদী ভাঙনের খবর শুনে ভয় করছে। পুরো ভবন ধসে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্টদের এখনই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।’
আবুল কাশেম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘কয়েক বছর আগে ভাঙনরোধে জেলা পরিষদ থেকে গার্ডওয়াল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এবার বৃষ্টিতে পানির তীব্র স্রোতে গার্ডওয়ালের অস্তিত্ব নেই।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম বাছির ভূঞা বলেন, ‘নদী ভাঙনের কারণে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এটি একটি বিপদজনক পরিস্থিতি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নদী ভাঙনের কারণে ভবনের একটি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সেখানে পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙন থেকে বিদ্যালয়ের ভবনটি রক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গেও কথা হয়েছে।’
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফুয়াদ হাসান বলেন,‘নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে, শিগগিরই কাজ শুরু হবে। তখন নদী ভাঙনরোধ করা যাবে।’
এসএন/রুপা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: