সোমবার, ২৫শে আগস্ট ২০২৫, ১০ই ভাদ্র ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথ দিয়ে কচ্ছপগতিতে চলে রমনা লোকাল ট্রেন, প্রায়ই লাইনচ্যুত


প্রকাশিত:
২৫ আগস্ট ২০২৫ ১২:২২

আপডেট:
২৫ আগস্ট ২০২৫ ১৬:৪০

ছবি ‍সংগৃহিত

রেললাইনে নেই পাথর, পচা কাঠের স্লিপার দেবে গেছে। কোথাও কোথাও লাইনের মাঝে ঘন ঘাস। দুই লাইনের সংযোগস্থলে চারটির স্থলে রয়েছে দুটি করে নাট-বল্টু। এমন ঝুঁকিপূর্ণ রেলপথে দিয়ে কচ্ছপগতিতে চলে ট্রেন।

কুড়িগ্রামের উলিপুরের পাঁচপীর রেলস্টেশন থেকে চিলমারীর রমনা রেলস্টেশন পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রেলপথের এমনি দৃশ্য চোখে পড়ে।

এই রেলপথটুকু পাড়ি দিতে রমনা লোকাল ট্রেনের এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়। পাঁচপীর থেকে চিলমারীর রমনা রেলস্টেশন পর্যন্ত রেলপথটি দিয়ে শুধু এই লোকাল ট্রেনটিই চলে। এ পথে ঘণ্টায় মাত্র ১৫ কিলোমিটার গতিতে চলে ট্রেন। কখনো এর চেয়েও ধীরগতিতে ট্রেন চালাতে হয়। কুড়িগ্রাম থেকে রংপুর ও পার্বতীপুর রেলপথে এই রমনা লোকাল ট্রেনের স্বাভাবিক গতি থাকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার।

রেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঝুঁকি বিবেচনায় এই রেলপথে ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সে গতি নিয়েও ট্রেন চলতে পারে না। ট্রেন চলার সময় দুদিকে দোলে। কোনো কোনো দিন লাইনচ্যুত হয়। ধীরগতিতে চলার কারণে পাঁচপীর থেকে চিলমারীর রমনা যেতে রেলপথের যেকোনো স্থানে থেকে ট্রেনে উঠে পড়ে দুরন্ত শিশু-কিশোরেরা। রেলপথের যেকোনো স্থান থেকে তারা ইচ্ছেমতো চলন্ত ট্রেনে উঠে আবার নেমে যাচ্ছে। কেউ কেউ চলন্ত ট্রেনের এক বগি থেকে অন্য বগিতে উঠছে।

ট্রেনের যাত্রী আমজাদ হোসেন বলেন, রমনা লোকাল ট্রেনটি কুড়িগ্রাম থেকে রমনা যেতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। এভাবে যদি ট্রেন চলে তাহলে বাসেই যেতে হবে।

লালমনিরহাট রেল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পাঁচপীর থেকে রমনা পর্যন্ত রেলপথের সংস্কারের জন্য এক বছরের বেশি সময় আগে দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় পার হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুধু মাটি ভরাট আর কয়েকটি রেলসেতু মেরামত করা হলেও রেললাইন, স্লিপার পরিবর্তন এবং পাথর ফেলার কাজ হয়নি। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারকাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে রেলপথটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

রমনা লোকাল ট্রেনের পরিচালক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘লাইনের সমস্যা। স্লিপার নেই, পাথর নেই। আমাদেরকে কুড়িগ্রাম থেকে রমনা পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালাতে বলা হয়। এজন্য সময়ও বেশি লাগে।’

তিস্তা থেকে চিলমারী পর্যন্ত রেলপথের দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাট রেল বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পিডব্লিউআই) বজলুর রহমান বলেন, ‘এক বছর আগে প্রায় ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে রেলপথ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। রেলপথটির ওয়ার্ক অংশের (মাটি ভরাট ও ব্রিজের) কাজ হলেও ওয়ে অংশের (লাইন, পাথর ও স্লিপার) কাজ হয়নি। স্লিপার সংকটের কারণে বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনস্ট্রাকশনের বিশ্বাস কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার রুবেল মিয়া বলেন, স্লিপার সংকটে রেলপথ সংস্কার কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। তবে আগামী মাসে কিছু স্লিপার আসার কথা রয়েছে। সেগুলো পেলে দূর্গাপুর থেকে উলিপুর পর্যন্ত রেলপথের কাজ শেষ হবে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবু হেনা মোস্তফা আলম বলেন, রেলপথটি আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ। সংস্কারকাজ আগামী অক্টোবর কিংবা নভেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু হতে পারে।

এসএন/রুপা


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top