অবশেষে উদ্বোধন হচ্ছে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু, ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমবে ১৩৫ কিলোমিটার
প্রকাশিত:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১৫:২৫
আপডেট:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১৯:৪৫

গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের মানুষের বহু প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। অবশেষে আগামী ২০ আগস্ট ২০২৫ (মঙ্গলবার) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম বৃহৎ সড়ক সেতু দ্বিতীয় তিস্তা সেতু।
সেতুটি উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সোমবার এলজিইডি গাইবান্ধা অফিস সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী। তিনি জানান, সেতুটি উদ্বোধনের দিন থেকেই যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
প্রায় ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ ও ও ৯.৬ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার এই সেতুটি দেশের ইতিহাসে এলজিইডির সর্ববৃহৎ প্রকল্প। এ সেতু নির্মাণে ব্যয় হয় ৯২৫ কোটি টাকা। এছাড়া সেতুর উভয়পাশে প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার নদী শাসন করা হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা এলজিইডি কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, সেতুটি নির্মিত হয়েছে গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দুরে জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরঘাট এলাকায়। এর অপর প্রান্তে কুড়িগ্রামের চিলমারী ঘাট। এ সেতু ঘিরে উভয় পাশে ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের প্রস্থ বৃদ্ধি ও পাকা করা হয়েছে। সংযোগ সড়কটি কুড়িগ্রামের চিলমারী, সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, বেলকাবাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, গাইবান্ধার হাট লক্ষীপুর, সাদুল্লাপুরের কামারপাড়া ও সাদুল্লাপুর হয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ধাপেরহাটে এসে শেষ হয়েছে।
সেতুর দুই পাশে প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার নদীশাসন এবং ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে। এই সড়ক কুড়িগ্রামের চিলমারী, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্লাপুর হয়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ধাপেরহাটে সংযুক্ত হয়েছে।
ফলে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের দূরত্ব প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার কমে আসবে, সময় সাশ্রয় হবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা। এটি কেবল গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের নয়, বরং উত্তরাঞ্চলের আরও বেশ কয়েকটি জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ সহজ করবে।
সেতুটি চালু হলে দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম পশ্চাৎপদ অঞ্চল গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম এর আর্থসামাজিক উন্নয়নের দ্বার খুলে যাবে। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বড় রকমের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এটি গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে সংযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১৪ সালে এই প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর প্রকল্পটির দরপত্র আহ্বান করা হয়। নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান “চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিএসসিইসি)”। ২০২১ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
এরপর ২০২৫ সালের ৪ জুলাই সেতুটি পরিদর্শনে আসেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ মিয়া।সে সময়ে তিনি জানিয়ে ছিলেন এ মাসের শেষ দিকে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করে কতৃপক্ষ। এরপর ২৫ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সেই তারিখ এগিয়ে এনে ২০ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: