মঙ্গলবার, ২২শে জুলাই ২০২৫, ৬ই শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


টিকটকে প্রেম থেকে বিয়ে, স্ত্রীর মরদেহ মিলল টয়লেটের ট্যাংকিতে


প্রকাশিত:
২১ জুলাই ২০২৫ ১৭:৩২

আপডেট:
২২ জুলাই ২০২৫ ০৪:২০

ছবি সংগৃহীত

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী ফাতেমা বেগম রূপালীকে (৩৬) গলা ও মাথায় কুপিয়ে মেরে হত্যা করেন স্বামী জামাল গাজী (৩৮)। টিকটকে প্রেম, বিয়ে এবং উভয়ের একাধিক বিয়ে নিয়ে সন্দেহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় স্বামী জামাল গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং শেষে আদালতে সোর্পদ করা হয় বলে জানান চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রকিব।

নিহত ফাতেমা বেগম রূপালী চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ৬নং উপাদী ইউনিয়নের ঘোড়াধারী গ্রামের কালু পাটোয়ারীর মেয়ে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহতের স্বামী মো. জামাল গাজী (৩৮) পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গেড়ামর্ধন এলাকার মোস্তফা গাজীর ছেলে।

চাঁদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানা যায়, ১১ জুলাই ফাতেমা বেগম রুপালীর নিজ বাড়ির টয়লেটের ট্যাংকি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তি ও সোর্স ব্যবহার করে কুষ্টিয়া জেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার বৃত্তিপাড়া বাজার এলাকা থেকে নিহতের স্বামী জামাল গাজীকে ২০ জুলাই দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করা হয়।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রকিব বলেন, তাদের দুই জনের ১১ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে পরিচয় হয়। জামাল গাজী নিজেকে চাঁদপুর কোর্টের পিপি সহকারী হিসেবে নিয়োজিত আছে মর্মে পরিচয় দেয়। প্রকৃত পক্ষে সে একজন গার্মেন্টস কর্মী। টিকটকে পরিচয়ের সূত্র ধরে তারা কক্সবাজার এবং সিলেট এলাকায় ভ্রমণ করেন। গত বছরের আগস্ট মাসে ঢাকা সদরঘাট এলাকায় ৩ লাখ টাকা কাবিন নির্ধারণ করে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

তিনি আরও বলেন, আসামি জামাল গাজী এর আগে আরও দুইটি বিয়ে করেছে, এটি তার তৃতীয় বিয়ে। ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম রূপালীর এর আগে চারটি বিয়ে হয়েছিল এবং এটি তার পঞ্চম বিয়ে। বিয়ের পর আসামি জামাল গাজী ও ফাতেমা বেগম রূপালী সংসার শুরু করে। আসামি জামাল গাজী তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা-পয়সা পাঠাতে শুরু করে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে দুইজনের ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে রূপালী বিষয়টি স্থানীয় লোকজনদের কাছে বিচার দেয়। গত ১৮ জুন জামাল হোসেন রুপালীর ঘরে থাকা ১১ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও নগদ ৩৬ হাজার টাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় চলে যায়। ২৫ জুন রূপালী তার আত্মীয়-স্বজন ও লোকজনের মাধ্যমে আসামি জামালকে তার বাড়িতে ধরে নিয়ে এসে স্বর্ণ ফেরত চায়। টাকা ফেরত না দেওয়ায় আসামি জামালকে তার পরিবারসহ জেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ নিয়ে ফাতেমা বেগম রূপালী চার দিন আসামিকে কোনো খাবার না দিয়ে মারধর করে।

পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রকিব বলেন, গত ১১ জুলাই রাতে আসামি জামাল রুপালীর কাছে ক্ষমা চায় এবং রাতে উভয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে রাত সাড়ে ৩টায় আসামি জামাল তার স্ত্রীর গলায় ও মাথায় দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর মাথায়, মুখমন্ডলে ও গলায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে রুপালীর মরদেহ টয়লেটের ট্যাংকির ভেতরে ফেলে কৌশলে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ কুষ্টিয়া অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি পারিবারিক কলহের জেরে সৃষ্ট ক্ষোভে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

এসএন /সীমা


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top