খুলনায় যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার নেই
প্রকাশিত:
১২ জুলাই ২০২৫ ১৯:০২
আপডেট:
১২ জুলাই ২০২৫ ২২:৫২

খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মোল্লা হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে নিহতের বাবা আবদুল করিম মোল্লা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী বলেন, নিহতের বাবা আব্দুল করিম মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। আমরা বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেই অনুযায়ী এ ঘটনায় কোন গ্রুপ জড়িত এটা মোটামুটি আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের তিনটি পার্টি অভিযানে রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে বাকি তথ্য পাওয়া যাবে।
এর আগে শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে নগরীর দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিম পাড়ায় নিজ বাড়ির সামনে যুবদল নেতা মাহবুবকে গুলি করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে কুপিয়ে তার পায়ের রগ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। মাহবুবুর রহমান মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল করিম মোল্লার ছেলে। তিনি দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে বাড়ির সামনে নিজের প্রাইভেট কার পরিষ্কার করছিলেন মাহবুব। এ সময় মোটরসাইকেলে আসা তিন ব্যক্তি গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। মাহবুব গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে যান। দুর্বৃত্তরা মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার পায়ের রগ কেটে দেয়।
এদিকে খুলনা মহানগরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন- খুন, অস্ত্রের মহড়া, চুরি, ডাকাতি ও লুটপাটের মতো ঘটনা খুলনায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ঘটছে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গোলাগুলি ও খুনসহ সন্ত্রাসী ঘটনা।
সর্বশেষ দৌলতপুরে সাবেক যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানসহ গত ১০ মাসে মহানগরীতে ২৭টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আর এ সকল ঘটনায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছে নগরবাসী।
তারা বলেন, মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা অবনতির দায়ভার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিগত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও খুলনার পুলিশ এখনো পুরোপুরি সক্রিয় হয়নি। আর এ সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। দীর্ঘদিন পলাতক ও জেলে থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এলাকায় ফিরে হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এছাড়া কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নগরবাসী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে সরকারও দায়ভার এড়াতে পারবে না। নগরবাসীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে দ্রুত আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিদাতারা হলেন, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, জেলা আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক যথাক্রমে শেখ সাদী, মাসুদ পারভেজ বাবু, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ প্রমুখ।
এসএন /সীমা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: