খোরশেদ-মাইমুনর সিন্ডিকেটে অস্থিরতা রূপালী ব্যাংক চট্টগ্রাম অঞ্চলে
প্রকাশিত:
৭ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৪৩
আপডেট:
৮ নভেম্বর ২০২৪ ০০:৪২
রূপালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম অঞ্চলে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বদলী ও প্রছন্দের জায়গায় পদায়নে একটি চক্র উধ্বর্তন প্রশাসনকে চাপে ফেলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম ও তার সহযোগী ব্যাংক কর্মকর্তা মাইমুনর রশিদসহ একটি চক্র এ প্রভাব বিস্তার করছে। তাদের মর্জিতে চলছে ব্যাংকটির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বদলি বাণিজ্য।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা খোরশেদ আলমকে সম্প্রতি নানা অপকর্মের দায়ে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, রূপালী ব্যাংকের কেউ না হওয়া স্বত্বেও তিনি ব্যাংকের কয়েকজন পরিচালকের সাথে সক্ষ্যতা থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রভাব বিস্তার, বদলি-পদায়ন বানিজ্য করছে। এছাড়া স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সমর্থিত পেশাজিবী ব্যাংক সংগঠন “বঙ্গবন্ধু পরিষদ” এর গুরুত্বপূর্ণ পদাধারী বিভিন্ন দুর্নীতিবাজ ও আর্থিক কেলেংকারীতে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের ব্যাংকের ভালো জায়গায় পদায়ন ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব পালন করায় মূলত বিএনপি থেকে তাকে বহাষ্কার করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, খোরশেদের অপকর্মের সহযোগী রুপালী ব্যাংক শান্তিরহাট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মাইমুনর রশিদের কক্সবাজারের খুরুস্কুল রাস্তার মাথায় অবস্থিত ভবনের দু’তলায় বসে ব্যাংক সংক্রান্ত নানা অপরাধ করে যাচ্ছেন। ওই কর্মকর্তা ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে খোরশেদের আলমের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদকে পুঁজি করে রুপালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের প্রশাসনে নগ্ন হস্তক্ষেপ শুরু করেন।
তারা রুপালী ব্যাংকের “জিয়া পরিষদের” নাম ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিস, কক্সবাজার জোনাল অফিস ও বিভিন্ন জোনের নির্বাহীদের রাজনৈতিক ভয়, দাপট, প্রভাব দেখিয়ে শুরু করেন ইচ্ছে মতো বদলি বানিজ্য, পদায়ন বাণিজ্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদের পদাধারীদের পুনর্বাসন ও দুর্নীতিবাজ-অসৎ অফিসারদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া।
এক্ষেত্রে, সদ্য ঘোষিত কর্মকর্তাদের ইনসেন্টিভ বোনাসের একটি অংশ খোরশেদ আলম ও মাইমুনর রশিদ হাতিয়ে নেন তাদের কাছ থেকে বদলি বাণিজ্য করতে। বিনিময়ে তাদের পদায়ন করেন ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার কাঞ্চন দাশকে কক্সবাজারের জোনাল অফিসে পদায়ন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হোসনে মোবারক জুয়েলকে বাজারঘাটা শাখায় ব্যবস্থাপক হিসেবে পদায়ন এবং রুপালী সদন কর্পোরেট শাখা, কক্সবাজারের সিনিয়র অফিসার হিসেবে দেলোয়ার হোছাইন কাদেরীকে বদলি এবং সাবেক চসিক প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিনের সহচর চকবাজার শাখার এসও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভিপতি মোহাম্মদ সাহিন উদ্দিনকে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ে পদায়ন করতে খোরশেদ আলম ও মাইমুনর রশিদ বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। আর ব্যাংকের নির্বাহীদেরকে আওয়ামীগ আমলে বৈষম্যের শিকার, অসুস্থতা, বিপ্লবের পক্ষের লোক ইত্যাদি তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক ভয়ভীতি, প্রভাব দেখিতে জিম্মি করে ফেলেন।
চট্টগ্রাম ডিভিশনের আওতাধীন এক নির্বাহী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খোরশেদ ও মাইমুনর রশিদের কথার বাইরে কোন বদলি করার সুযোগ ই ছিলনা গত তিন মাস ধরে। অথচ উক্ত কর্মকর্তাদের যাদের এখন বিভিন্ন জায়গায় পুণর্বাসন করা হচ্ছে তারা বিভিন্ন অনিয়ম ও আর্থিক কেলেংকারীর জন্য, ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন জায়গায় উড়ু চিঠি লিখে ব্যাংকের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।
জানা যায়, পর্যটন অঞ্চল কক্সবাজারে বিভিন্ন নির্বাহী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে প্রটোকল দিয়ে সখ্যতা গড়ে তুলতে মাইমুনর রশিদ ব্যাংকের সাবেক একজন কর্মকর্তা (বর্তমানে মৃত) কাজী এনামুল হকসহ বিভিন্ন নির্বাহী ও সিনিয়র অফিসারদের সাথে দ্বন্দে জড়ান। তিনি জোনাল ম্যানাজারের কাজে হস্তক্ষেপ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া রুপালী ব্যাংকের বিভাগীয় কার্যালয়ের পিএস করার জন্য কয়েকদিন আগে মাইমুনর রশিদ খোরশেদ আলমের প্রভাব প্রতিপত্তিকে পুঁজি করে জিএমকে হুমকী দেন। আওয়ামীগ সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের পদধারী, দুর্নীতিবাজদের পদায়নে মাইমুন ও খোরশেদরা প্রায় সময় কর্মকর্তাদের শাসিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে রূপালী ব্যাংক চট্টগ্রাম অঞ্চলে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: