বরগুনায় প্যানেল মেয়রের বিরুদ্ধে নৌকার ভোট কেনার অভিযোগ
 প্রকাশিত: 
                                                ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:০০
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:২৮
                                                
 
                                        বরগুনা-১ আসনে টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর পক্ষে ভোট কেনার অভিযোগ উঠেছে। বরগুনার আমতলী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মীর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
শম্ভুর নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী ব্যানার পেছনে রেখে টাকা দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে নির্বাচনি এলাকাজুড়ে। নারী ভোটারদের ভোট কিনতে এ টাকা দেওয়া হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এমন দাবি করলেও অভিযুক্ত মীর হাবিবুর রহমান তা অস্বীকার করেছেন।
টাকা দেওয়ার ভিডিওটিতে দেখা যায়, আমতলী পৌরসভার প্যানেল মেয়র মীর হাবিবুর রহমান সারিবদ্ধভাবে একে একে বিভিন্ন বয়সী নারীদের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছেন। এসময় কয়েকজন পুরুষকেও টাকা নিতে দেখা যায়। তবে কত টাকা করে দেওয়া হয়েছে ভিডিও দেখে তা স্পষ্ট বোঝা যায়নি। ভিডিওতে 'নৌকা নৌকা' বলতেও শোনা যায়। মোবাইল ফোনে অন্য কারও সঙ্গে মেয়রকে বলতে দেখা যায়, মামা সব শেষ হইছে। প্যাকেট মনে হয় দেয় নাই।
ওই ভিডিওতে আরও দেখা যায়, একে একে সবাইকে টাকা দেওয়ার সময়ে প্যানেল মেয়রের সঙ্গে আরও কয়েকজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের পেছনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর নৌকা প্রতীকের একটি নির্বাচনি ব্যানার সাঁটানো রয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী খলিলুর রহমান বলেন, আমরা একটি অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করি। তবে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে টাকা দেওয়ার একটি ভিডিও আমি দেখেছি। টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার সমর্থন আমি করি না। যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পায়তারায় কালো টাকা ছড়াচ্ছেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
এ আসনের আরকেজন স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, নির্বাচনি এলাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তার লোকজন কালো টাকার প্রভাবে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন। যা নির্বাচনী আচরণবিধির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির পাশাপাশি কালো টাকার প্রভাব বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্যানেল মেয়র মীর হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতি বছর শীতের সময়ে অসহায় মানুষদের কম্বল বিতরণ করি। এ বছর কম্বলের পরিবর্তে একশ টাকা করে দিয়েছি। একশ টাকায় কোনো মানুষকে ভোলানো যায় না। এগুলো অহেতুক মানুষকে হয়রানি করা। নির্বাচন চলাকালীন একটা দুর্নাম।
টাকা দেওয়ার সময়ে পিছনে নির্বাচনি ব্যানারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার বাসায়। ওইখানে ব্যানার আগেই টানানো ছিল। এটা আমি অবগত ছিলাম না। নির্বাচনে সময়ে এটা করাও যায় না। মানুষ বারবার বাসায় আসে শীতের কম্বল নিতে। একারণেই কম্বলের পরিবর্তে তাদেরকে একশ টাকা করে দিয়েছি। এ টাকায় কোনোদিন ভোট কেনা যায় না। কিন্তু এই মুহূর্তে এ টাকা দেওয়া আমার ভুল হয়েছে। নির্বাচনের পর দেয়া উচিত ছিল।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত নই। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: