বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, তীব্র হচ্ছে স্যালাইন সংকট
প্রকাশিত:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:১৩
আপডেট:
১৩ অক্টোবর ২০২৪ ০১:৪৪
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রতিদিন সর্দি-জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। তাই চাহিদার তুলনায় কম সরবারহ থাকায় এনএস ও ডিএনএস স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে হাসপাতাল ও ফার্মেসিগুলোতে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীরা।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় পটুয়াখালীতে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩০০ জন। এছাড়া শিশু আক্রান্ত হয়েছে ২৭৩ জন। এরমধ্যে ১৩১ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এছাড়া জানুয়ারী থেকে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৫ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৩৭৪ জন। বেশিরভাগ রোগী ঢাকা থেকে বাড়িতে ফেরা মানুষ।
সরেজমিনে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু রোগীদের চাপে হাসপাতালে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের কোথাও রোগীর জন্য শয্যা খালি নেই, ওয়ার্ড ছাড়িয়ে বারান্দায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে ডেঙ্গু রোগীরা। অপরিষ্কার পরিবেশ, যেখানে সেখানে পড়ে আছে ডাবের খোলা, রোগীদের সঙ্গে আসা স্বজনদের ভীড়, অধিকাংশ রোগীর মশারি টাঙানো নেই।
বারান্দায় চিকিৎসা সেবা নেওয়া বগা ইউনিয়নের রাকিব বলেন, অনেক অসুস্থ ছিলাম। গত ৫ দিন ধরে হাসপাতালের বারান্দায় আছি। এখন সুস্থ হয়েছি। ছাড়পত্র দিয়েছে বাড়ি চলে যাব। তবে স্যালাইন সংকট রয়েছে, হাসপাতালের সামনের দোকানে স্যালাইন নেই। দূর থেকে আনতে হয়েছে। আর হাসপাতাল থেকে স্যালাইন দেয় না।
এ সময় কমলাপুর ইউনিয়নের রোগীর স্বজন জাকির হোসেন বলেন, বিভিন্ন দোকান ঘুরে স্যালাইন বেশি দামে কিনে আনতে হয়। এমনিতেই হাসপাতালে অনেক খরচ, তার মধ্যে স্যালাইন দেয় না আবার বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হয়। এই স্যালাইন সংকট নিরসন করা জরুরি প্রয়োজন।
সোনালী ফার্মেসির ওষুধ বিক্রেতা সমীর বলেন, অনেকদিন ধরেই স্যালাইনের সংকট চলছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম রয়েছে স্যালাইনের। কোম্পানির কাছে যে পরিমাণ অর্ডার দেওয়া হয় তা তারা সরবরাহ করতে পারে না।
হাসপাতাল গেটের এইচ আর ফার্মেসির পরিচালক রেজা খান বলেন, গত ১৫ দিন থেকে স্যালাইনের খুবই সংকট, রোগীরা চাইলেও দিতে পারছি না। কোম্পানিরা কিছু স্যালাইন দিলেও তা শেষ হয়ে যায়। তাদের কাছে চাইলে তারা বলে সাপ্লাই নেই।
এ বিষয়ে একমি ওষুধ কোম্পানির পটুয়াখালী বিক্রয় প্রতিনিধি সুমন আহমেদ বলেন, উৎপাদন করতে না পারায় গত দুই মাস থেকে আমরা চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই করতে পারছি না। হেড অফিস থেকে না আসলে আমরা কিভাবে দেব। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার পরে স্যালাইন এবং সাপোসিটারের সংকট দেখা দিয়েছে।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা বলেন, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য এনএস ও ডিএনএস স্যালাইন দেওয়া হয় না। অন্যান্য যে রোগীরা রয়েছে তাদের জন্য দেওয়া হয় তবে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য স্যালাইন বাইর থেকে কিনতে হয়। আর বাইরে এই স্যালাইনের কিছুটা সংকট রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান বলেন, হাসপাতালসহ সব জায়গায়ই স্যালাইনের সংকট রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। এখন দ্রুত সমাধান পাওয়া যাবে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: