শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ঘুমন্ত স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেন স্ত্রী


প্রকাশিত:
১১ জুন ২০২৩ ২১:৩০

আপডেট:
১৭ মে ২০২৪ ১১:২১

 ফাইল ছবি

ফল ব্যবসায়ী স্বামী বাবর আলীর অগচরে বিভিন্ন বেসরকারি এনজিও থেকে ৪-৫ লাখ টাকা লোন নিয়েছিলেন স্ত্রী মহিমা খাতুন। বিষয়টি জানতে পেরে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। মাস শেষে মোটা টাকা সুদ হিসেবে বহন করতে হতো ফল ব্যবসায়ী বাবর আলীর।

যা ফল বিক্রয় করে তার পক্ষে দেওয়া সম্ভব ছিল না। এভাবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বাড়তেই থাকে। এরই জের ধরে রাতে ঘুমন্ত স্বামীর গলায় হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। রক্তাক্ত অবস্থায় বাবর আলীকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।

এই চাঞ্চল্যকর হত্যার দুদিনের মাথায় রহস্য উদঘাটন করেছে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানা পুলিশ। স্ত্রী মহিমা খাতুন নিজের তার স্বামীকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তার দেওয়া তথ্যমতে উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাসুয়া।

নিহত বাবর আলী দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি কুড়ুলগাছী ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মৃত. আব্দুল সাত্তারের ছেলে। রোববার (১২ জুন) দর্শনা থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা এসব তথ্য জানান।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় বাবর আলীকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে পালিয়ে যায় বলে জানান স্ত্রী মহিমা খাতুন। সেই রাতেই বাবর আলীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরপর দিন নিহত বাবর আলীর ভাই ছাবের আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হত্যার পরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ তার স্ত্রী মহিমা খাতুনের অসঙ্গত আচরণে আমাদের সন্দেহ বাড়ে। পরে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে স্বামীর হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন তিনি। তার সঙ্গে কেউ জড়িত নয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তার শয়নকক্ষের খাটের নিচ থেকে হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত হাসুয়া উদ্ধার করা হয়েছে।

মহিমা তার স্বীকারোক্তিতে জানান, স্বামীর অজান্তেই বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিতেন। প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা সুদ হিসেবে বহন করতে হতো বাবর আলীকে। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ বাড়ে। এরই জের ধরে ঘুমন্ত স্বামীর গলায় হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। পরে আতঙ্কিত হয়ে পড়লে হত্যায় ব্যবহৃত হাসুয়া লুকিয়ে রাখেন তিনি এবং চিৎকার চেচামেচি করেন। পরে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে এলে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবর আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।

নিহত আলীর ছেলে মাহিন বলেন, রাতে মা আমাকে ঘুম থেকে ডেকে বলেন, তোর বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কে বা কারা মেরে ফেলেছে। এরপরই দ্রুত প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে তিনি মারা যান।

এদিকে দর্শনা থানা পুলিশের বিচক্ষণতায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার ঘটনা উম্মোচন করায় এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন। মহিমা খাতুনের সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানান তারা। আজ রোববার মহিমা খাতুনকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top