পরিবেশ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন
প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২৪ ১৭:৩৫
আপডেট:
৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭
জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। এর ফলে বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতি প্রাণিসম্পদ মৎস্য উৎপাদনসহ নানান ক্ষেত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবেশের প্রতি মানুষের নির্মম আচরণ বন্ধ করা না গেলে পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা করা যাবে না। পরিবেশ রক্ষা করতে হলে সরকারি-বেসরকারি সমুন্নত উদ্যোগ প্রয়োজন।
বুধবার (৫ জুন) প্রেস ক্লাবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে ‘ভূমি পুনরুদ্ধার, খরা মুক্ত টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। আলোচনা সভার আয়োজন করেন অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি ইন বাংলাদেশ (এডাব)।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের কর্মসূচি পরিচালক কাউসার আলম কনক। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের ৪২টির মধ্যে মাত্র ২৬টি খাল বেঁচে আছে। সেগুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। শব্দের মাত্রা ১১৯ ডেসিম্যাল যা স্বাভাবিকের দ্বিগুণের বেশি। রাজধানীর পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান উপাদান বায়ু দূষণ। এক্ষেত্রে বিশ্বে প্রথম এবং দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঢাকা।
এ সময় তিনি গাছ কাটা বন্ধ; আবাসন ও শিল্পায়নের নামে ভরাট বন্ধ; অবৈধ খাল দখল বন্ধ; জলাভূমি সংরক্ষণ; ইটভাটা বন্ধ; কৃষি ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত সার কীটনাশক ব্যবহার বন্ধের সুপারিশ করেন।
সভায় গবেষণা ও উন্নয়ন কালেক্টিভ (আরডিসি) এর সাধারণ সম্পাদক জান্নাত-এ ফেরদৌসী লাকি বলেন, যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তারাই পরিবেশকে সবচেয়ে বেশি আগলে রাখেন। আমি প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি গাছকে সন্তানের মতো আগলে রাখেন সেখানকার মানুষ।
দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ত পানির কারণে নারীরা বন্ধ্যাত্বের শিকার হচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের উচ্চতা বাড়ছে। এতে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন জায়গায় মাইগ্রেশন হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় যে আইনগুলো হয়েছে সেগুলোর প্রয়োগ হচ্ছে না। এর সঙ্গে ক্ষমতার একটা সম্পর্ক আছে।
সিনিয়র সাংবাদিক ও মিডিয়া গবেষক শামীমা চৌধুরী বলেন, আমরা যে সমস্যাগুলোর কথা বলছি সেগুলো সমাধান হচ্ছে না কেন? পাঁচ বছর আগে যে সমস্যাগুলো ছিল এখন সেগুলো আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা অনেক আলোচনা করলেও পলিসি লেভেলে এসব সমস্যা আলোচনায় আসে না।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য শাহিদা তারেক দীপ্তি বলেন, গত এক মাসে এত তাপদাহ দেখা গেল। কতজন এসিতে থাকে? যারা কুড়ে ঘরে, টিনের ঘরে থাকে তাদের কী অবস্থা? অনেকেই হিটস্ট্রোকে মারা গেছে। পরিবেশ শুধু গাছ নয়, পরিবেশকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এডাবের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাজেদা শওকত আলী বলেন, সবার আগে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। মানসিকতার পরিবর্তন না হলে যতই আইন করা হোক কোন কাজে আসবে না। বঙ্গবন্ধু বলতেন, আমার কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আজকে তো দেশে কৃষক বাঁচছে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: