রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১

তাপদাহের ভয়ে চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা


প্রকাশিত:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১১:২০

আপডেট:
৫ মে ২০২৪ ০০:২৪

ছবি- সংগৃহীত

অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা অসুস্থতার ভয়ে চাষিরা পারছেন না খেতের পাকা ধান কাটতে। তাই বাধ্য হয়ে ধান কাটার সময় হিসেবে রাতের বেলাকে বেছে নিয়েছেন তারা। দিনে তীব্র তাপদাহর কারণে বাসায় থাকছেন, আর রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা।

এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর কাশাভোগ এলাকায়। এদিকে, এই সমস্যা সমাধানে সরকারের দেওয়া কম্বাইন হার্ভেস্টার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন জেলা কৃষি বিভাগ।

ধানচাষিরা জানান, সারাদেশে চলছে তীব্র দাবদাহ। এর প্রভাব পড়েছে শরীয়তপুরে ধানচাষিদের মাঝেও। অধিকাংশ জমিতে গত একসপ্তাহ ধরে জেলার বোরোধান পাকা শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত গরমে দিনের বেলা হিটস্ট্রোকসহ বিভিন্ন অসুস্থতার ভয়ে ধান কাটতে পারছেন না চাষিরা। তাই রাতের বেলায় চাঁদের আলোয় ধান কাটতে দেখা গেছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর কাশাভোগ এলাকার ধানচাষিদের। এই অতিরিক্ত গরমে শ্রমিক না পেয়ে নিজেরাই নিজেদের জমির ধান কাটছেন। যতদিন চাঁদের আলো থাকবে, ততদিন এই ধান কাটবেন বলছেন তারা।

সরেজমিনে বেশ কয়েকটি ধানের জমিতে গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে দুলছে সোনালী ধান। অধিকাংশ জমির ধান এখন পেকে গেছে। দিনের বেলা প্রখর রোদের তাপ থাকায় রাতের বেলা চাঁদের আলোয় ধান কাটছেন চাষিরা।

জেলা কৃষিবিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে বোরোধানের আবাদ করা হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৬২৭ মেট্রিক টন। আর গত বছর জেলায় বোরোধানের আবাদ হয়েছিল ২৫ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৯০৬ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরোধানের উৎপাদন বেড়েছে এক হাজার ৭২১ মেট্রিক টন। তবে চলতি বছরে একটানা চলা তীব্র দাবদাহে ধানের উৎপাদনে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে ধারণা কৃষিবিভাগের।

চাষি মিজান শিকদার বলেন, ৮০ শতাংশ জমিতে আমি বোরো ধানের চাষ করেছি। ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে বিপাকে পড়েছি ধান পাকার পর। তীব্র দাবদাহে দিনের বেলা ধান কাটতে রাজি হচ্ছে না শ্রমিকরা। পরে সিদ্ধান্ত নেই নিজেরাই রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটবো। তাই আমরা চারজন ধান কাটা শুরু করি। রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোর ৫টা পর্যন্ত আমরা ধান কাটি।

স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, তীব্র গরমের কারণে জেলায় এই প্রথম রাতে চাঁদের আলোয় চাষিদের ধান কাটতে দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোহাম্মদ রিয়াজুর রহমান বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহে আমাদের কৃষকদের দিনের বেলা ধান কাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ অতিরিক্ত গরমে কাজ করলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। যারা এই গরমে মাঠে কাজ করবেন তাদের প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করার পাশাপাশি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তীব্র তাপদাহর কারণে কিছু কিছু কৃষক রাতে চাঁদের আলোয় ধান কাটছে। সেক্ষেত্রে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকে অনেকগুলো কম্বাইন হার্ভেস্টার দেওয়া হয়েছে। এই কম্বাইন হার্ভেস্টার যদি ব্যবহার করে তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে তারা ধান কাটতে পারবেন। ধান কর্তনের যে ক্ষতি হয়, সেই ক্ষতি থেকেও বাঁচবেন। পাশাপাশি কৃষকরা স্বাস্থ্য ঝুঁকি মুক্ত থাকবে বলছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top